বিজয় নিশান
এখনো বুকে চাপা দীর্ঘশ্বাস
এখনো হৃদয়ে বাজে আত্ম চিৎকারের ধ্বনি।
আঁখিতে অশ্রু,হাহাকারের সুর হৃদয় ও মনে
বোনটি নিখোঁজ, ভাই কোথায়?
মায়ের চোখে অশ্রু থাকলে ও মনে শত্রু হননের আক্ষেপ।
বাবার মনোবল ;
প্রতীক্ষার প্রহরের শেষ কোথায়?
হারানো গল্পগুলো এখনো অতীত নয়
এখনো বধ্যভূমি
বিজয়ীর শোকার্ত কবিতা।
দাউ দাউ করে পুড়ছে মনের ক্ষত গুলো
দেখি রূপকথার মতো স্তব্ধ আতঙ্কিত মৃতদের দেশে
উদ্বাস্তু জনস্রোতে–
তবু জাতিস্মর স্বপ্নে জন্ম হচ্ছে আমাদের সূর্য সন্তান
পতাকা উড়িয়ে দেখি সেখানেও মানচিত্র,
সেখানেও রক্তে লেখা মৃতদের নাম-
সেখানে দাঁড়িয়ে আমি দেখি স্নিগ্ধ সকাল দেখি প্রভাতের সূর্য
সেখানে দাঁড়িয়ে আমি খুঁজে পাই নক্ষত্র খচিত-
বিশাল আকাশে বিজয় নিশান।
ইংরেজি বর্ষবরণ
দিনগুলো পথ পেরিয়ে পুরনো ক্যালেন্ডার ছাপিয়ে চলে যেতে প্রস্তুত প্রায় শুধু একটু সময়ের ব্যবধানে।
ঘড়ির কাঁটা তো ছুটে চলছেই সময়ের টানে বছরকালের ইংরেজি সময়ে,
চারপাশে সুসজ্জিত যেন সবকিছুতেই নতুনত্ব।
ঘুমের আসক্তিতে অসহায় দু’নয়ন
পানশালায় বাড়ছে ভিড়,আধো ছায়া আলোর সীমাহীন গতি
রঙিন আলোয় নতুন সাজে টেবিল সাথে দামি হুইস্কির বোতল।
খুশির জোয়ারে ওয়েটারের দৌড়ঝাপ
বেহিসাবি বিবেক,সময় গুনার অভিলাষ।
রাত বারোটা বাজাতেই আতশবাজির কান ফাটা শব্দের নৃত্য
বারুদের তাজা গন্ধ আকাশে আগুনের ঝলকানি।
শ্যাম্পেইনের ফেনার মাখোমাখো অভ্যর্থনা
ভাষাহীন অর্থহীন গান আর মিউজিক
নেশায়মত্ত শরীর ভারসাম্যহীন রুচিহীন নাচ।
বর্ষবরণের আয়োজনে ব্যস্ত নগর জীবন
ছুটে চলে সময় ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে হারিয়ে যায় আরো একটি বছর,
দিন গুনা শুরু নতুন দিন এভাবেই ছুটে চলা পুরাতনের গ্লাণি মুছে নতুনের আগমনে ইংরেজি বর্ষবরণ।
সমীকরণ
আমি গণিতে বরাবরই বেশ কাঁচা ছিলাম,
হিসেবের খাতাটা আজও শূন্যই রয়ে গেছে।
সময়ের বিবর্তনে ছুটে চলা
আজ ও খুঁজে ফিরি অতীতের ফেলে আসা স্মৃতি।
জীবনের অংকে আমি কেবল একটাই সমীকরণ মেলাই;
হয়তো বড্ড দেরি হয়ে গেছে।
আমার জ্ঞানের পরিধি খুব কম
কোথায় কখন কি বলতে হয় জানি না-
এতটুকু বুঝি জীবনের অসহায়ত্ব বোধ।
ক্লান্ত দেহ মন অসহ্য বিশ্রী স্মৃতির অবগাহন,
সময়ের পরিবর্তনে চাঁদের আলোকেও কেন জানি বিষাদ মনে হয়।
ধূসর গোধূলি বেলা নিথর নিস্তব্ধ রাত প্রকৃতি আর যৌবন মিলিত হতে চাই ;
চেনা পথগুলো কেমন অচেনা মনে হয়ে মিশে যেতে চায় অজানা গন্তব্যে !
নির্বাক দর্শকের মত চেয়ে থাকি সময়ের কর্মযজ্ঞে।
আর নিরুপায় দৃষ্টি কেবলই খুঁজে-
কি ছিলো আর কি আছে?
দ্বিধাদ্বন্দ্বের বিশদ পথ মাড়িয়ে-
হিসেবের খাতায় জড়ো হয় গড়মিল।
অজান্তেই তালুবন্দী হয় জীবনের সমস্ত কর্মকাণ্ডের সাথে অর্থ,
জীবন যেন জ্যামিতিক সমীকরণ!
এখানে-
বিরামহীন বর্ষণে প্লাবিত হয় লোনা জলের আবাস।
বিষন্ন মেঘেরা গ্রাস করে নীল আকাশ,
ডানাভাঙা পাখির চিৎকারে আছড়ে পড়ে সন্ধ্যার শোক।
কৃষ্ণচুড়ার ডালে ভর করে শালিকের দল,
ঝড়ো হাওয়ায় পথ হারায় একাকী শঙ্খচিল!
বিষময় হয়ে ওঠে লক্ষীন্ধরের বাসর!
তবুও-
ছেঁড়া পাল দখিনা বাতাসে উড়ায়!
প্রাণপণে আঁকড়ে ধরি ঘুনে ধরা কুঠিরের খুটি।
আকাশের পানে প্রার্থনা করি আশীর্বাদী চাঁদের,
বসন্তের আগমনী গান লিখি রাত জেগে-
গড়মিল হিসেবে স্ব-ইচ্ছায় গুঁজে দেই গুঁজামিল।
ভাবনায় গড়ে তুলি সরল জীবনের রঙ্গিন পটভূমি।
সময় আসে থাকে চলে যায়
জীবনের চিত্তে হাজারো স্বপ্ন হাতছানি দেয় ;
সমীকরণ খুঁজি জীবনের যোগ বিয়োগে।