ছেঁড়া ফুল
এই গোধূলি বেলায়
যদি হই মেঘ,
বৃষ্টি হয়ে ঝরাবো
মনেরই আবেগ ।
ওই আকাশের বুকে
যদি হই তারা,
একাই থাকবো জেগে
হলে দিশেহারা ।
এই আমি পরগাছা
ছেঁড়া এক ফুল,
দুটি চোখে দেখি নাতো
আশাভরা কূল ।
বন্ধু আমার
বন্ধু আমার সন্ধ্যে তারা
জ্যোৎস্নামাখা রাত,
নীল আকাশে ভেসে থাকা
পূর্ণিমার ওই চাঁদ ।
বন্ধু আমার ভোরের শিশির
পাখির ডাকাডাকি,
মিষ্টি রোদের মিষ্টি ছোঁয়া
আলোর মাখামাখি ।
বন্ধু আমার ক্লান্ত ক্ষণের
রাঁখাল ছেলের বাঁশি,
হাওয়ায় দোলা গাছের শাখে
হাজার ফুলের হাসি ।
বন্ধু আমার গোধূলি ক্ষণ
একটু শীতল হাওয়া,
দুখের মাঝে সুখের সুরে
প্রাণখুলে গান গাওয়া ।
জাতীয়দের আর্তনাদ
শাপলা যদি জানত সে যে
জাতীয় এক ফুল,
কখনোই সে করত নাতো
বিলেঝিলে ময়লা জলে
ফোটার মতো ভুল |
থাকতে চাইতো খুব যতনে
স্বচ্ছ নিবির জলে,
তুলতো না কেউ সকাল হলেই
বিক্রি খাওয়ার ছলে ||
দোয়েল যদি জানত সে যে
জাতীয় এক পাখি,
বলত সে আজ আমি কেন
পোঁকা খেয়ে থাকি?
বন বাদাড় আর ঝড়ে কেন
হব আমি বড়?
তাড়াতাড়ি আমার জন্য
অভয়ারণ্য গড়ো !|
ইলিশ যদি জানত সে যে
জাতীয় এক মাছ,
পারত না কেউ তার শরীরে
দিতে ফুলের আঁচ !
বলত সে যে আমায় কেন
ঝাঁটকা হতেই খাও?
জাতীয় মাছ আমি আমায়
বড় হতে দাও |
কাঁঠাল যদি জানত সে যে
জাতীয় এক ফল,
দুঃখ পেত তার ভীতরে
দেখে মরণ কল |
ফরমালিনের বিষের জ্বালায়
বলত সে যে কেঁদে,
এমনি করে পাঁকাসনে তো
কাঁচা খা ভাই রেঁধে !|
বৈরী শীত
হিমেল হাওয়া বইতে দেখে
শীত ছুটে আয় তরতর,
বৈরী হীমে প্রাণ হারিয়ে
পাতা ঝরে ঝরঝর |
দমকা হাওয়ায় পত্রশূন্য
গাছ কাঁপে সব থরথর,
শীতের তোপে জনমানবের
বুক কাঁপে আজ ধড়ফড় |
ঝরে পড়া শুকনো মাঠে
পাতার নূপুর মড়মড়,
চোখ পাকিয়ে শীতের বুড়ি
করে শুধু কড়মড় |
পুকুর বিলে নেই যে পানি
মাটি করে কড়কড়,
স্নীগ্ধ সতেজ মানুষগুলোর
ঠোঁট শরীর সব চরচর ||
আক্ষেপ
অন্ধ মনে ছন্দ পাইনা
ছন্দ গেল হারিয়ে,
দ্বন্দ্ব ছাড়া নাইরে কিছুই
ছন্দ দিল তাড়িয়ে ।
স্বপ্ন ছিল অন্ধ চাওয়া
অন্ধ মনের ভিটায়,
দ্বন্দ্বে ছন্দ ডুবে গেল
স্বপ্নের পৃথিবীটায় |
কষ্ট ছাড়া নষ্ট জীবন
পষ্ট সুখেই মরণ,
কষ্ট তাইতো যত্ন করি
ধরি দুখের চরণ ।